তাহসান আজও আমার বন্ধু, রোজ কথা হয় আমাদের: মিথিলা

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। দুই বাংলায় ব্যাপক আলোচিত এক অভিনেত্রী। তিনি সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকাকে এক সাক্ষাৎকার দেন।

সেখানে তিনি বলেন, তাহসান আমার প্রাক্তন স্বামী। আমরা আজও বন্ধু। আমাদের রোজ কথা হয়। মানুষকে বুঝতে হবে আমরা দুজনে এক বাচ্চার বাবা-মা। আমাদের সম্পর্কটা এখন বন্ধুর মতো। আর এই সম্পর্ক আয়রার জন্য খুব জরুরি।

তিনি আরও বলেন, আমার আর তাহসানের স্বাভাবিকতার জন্যই আয়রা আমায় আজ বলতে পারে, ‘মা আমি বাবার কাছে যাব’। আমার অন্যান্য বন্ধুদের তো দেখেছি বিবাহ বিচ্ছেদের পরে পারস্পরিক সম্পর্ককে তাঁরা এত তিক্ত করেছে যে তার প্রভাব বাচ্চার ওপর এসে পড়েছে। আয়রা সেখানে স্বাভাবিক পরিবেশে বড় হচ্ছে। তবে এখন আয়রার স্কুল আর নতুন বই নিয়ে চিন্তায় আছি। কলকাতার সংসারটাও গোছাতে হবে।

ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে গাঁটছড়া বাঁধেন ঢাকার মডেল ও অভিনেত্রী মিথিলা। বিপরীতে তার প্রাক্তন স্বামী জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান এখনও সিঙ্গেলই আছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে মিথিলা বলেন, হিসেব মতো বিয়ের পরে আমি আর সৃজিত ৭ থেকে ৮ মাস একসঙ্গে থেকেছি।এরকম হয়েছে, আমি আর আয়রা হয়তো কলকাতায় তখন সৃজিতকে শ্যুটিং-এ যেতে হয়েছে। আবার আমি কাজে ঢাকায় চলে এসছি। আমরা দুজনেই এত ব্যাস্ত! তারপরে এই অতিমারি। কিছু ভাবতেই দিচ্ছে না। এই তো এ বছর এপ্রিল থেকে আমরা ঢাকায়। কিন্তু এ বার কলকাতায় আয়রার স্কুল খুলে যাচ্ছে।অনলাইনে ক্লাস সম্ভব হলেও ওর নতুন বইপত্র সব কলকাতায় পড়ে আছে। কী যে করব! বর্ডার বন্ধ। আমি আর সৃজিত রোজই আমাদের যাওয়া নিয়ে আলোচনা করি। ও যে ঢাকায় আসবে, তাও তো হবে না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মিথিলা বলেন, সৃজিত আর আমার মিলন বিচ্ছেদের কোনও প্রশ্ন নেই।এই অতিমারির নানা নিয়ম পেরিয়ে আমরা কী ভাবে একসঙ্গে থাকব সেটা নিয়েই রোজ ভাবি। আলোচনা করি। আমাকে সৃজিতকে নিয়ে বা আমার বিয়ে নিয়ে আজ নয়, ভারত আর বাংলাদেশ দু দিকেই নেটমাধ্যমে অজস্র কটাক্ষের শিকার হচ্ছি। তবে সাম্প্রতিক কালে অরুচিকর কথা বেড়েছে। আমাকে ‘অসভ্য’ বলে মানুষ নিজে যে অসভ্যতার পরিচয় দিচ্ছে সেটা আগামী পৃথিবীর জন্য একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়।

বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আক্ষেপ করে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদপত্রকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী মিথিলা আরও বলেন, বাংলাদেশে তো মানুষের সবচেয়ে বেশি রাগ আমার ওপর।মানুষ প্রশ্ন করছেন মেয়ে হয়ে কেন আমি বিবাহ বিচ্ছেদ করলাম? মেয়েদের নাকি এ সব করতে নেই। তাহসানের ওপর কিন্তু মানুষের রাগ নেই। রাগ যত আমার ওপর। আমি কেন বিয়ে করলাম? আর সৃজিত তো ইসলাম ধর্মীও নয়। আমি বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে কলুষিত করেছি। আমি নাকি ‘চরিত্রহীন মা’। এই ‘অসভ্য’ মা ‘অসভ্য’ জাতির জন্ম দেবে।