দুপচাঁচিয়া উপজেলা

দুপচাঁচিয়ায় জোরপূর্বক জমি দখলের প্রচেষ্টায় হামলা, থানায় মামলা দায়ের

বগুড়া দুপচাঁচিয়া পাইকপাড়া এলাকায় কবলা দলিল মূলে ক্রয়কৃত সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টায় ঢাকানিবাসী এক ব্যক্তিসহ তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গত ১ জুন রাতে দুপচাঁচিয়া থানায় মামলা দায়ের হয়েছে কিন্তু জমি রক্ষায় এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে ভুক্তভোগীরা।

এজাহার ও বাদীর বক্তব্যে জানা যায়, ২০০৩ সালের ২৭ মার্চ পাইকপাড়ার বাসিন্দা নজীর উদ্দিনের কাছে থেকে কবলা দলিল মূলে ৩ শতক জমি ক্রয় করেন ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম বিশ্বাস। ক্রয়ের পর থেকে কাগজপত্র ও দখলসূত্রে মালিকানা ভোগ করছেন তিনি। প্রায় ৩ থেকে ৪ বছর আগে নজীর উদ্দিন মারা গেলে বিক্রেতার ভাইয়ের ছেলে আবু সাইদ ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনরা জমিটি নিজেদের বলে হঠাৎ দাবি জানায়। যেহেতু বাদী রফিকুল ইসলাম পেশাগত কারণে ঢাকায় থাকে এই সুযোগে বছর খানেক আগে অভিযুক্তরা ওই জমি জোর করে দখল নেয়ারও চেষ্টা করে কিন্তু পুলিশি হস্তক্ষেপে সেই সময় জমি রক্ষা পায়। এমতাবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু রাখতে ২ পক্ষকেই পুলিশ থানায় ডেকে পাঠাই কিন্তু বাদী রফিকুল তার বৈধ সকল কাগজপত্র দেখাতে পারলেও বিবাদীরা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।

এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন যে, গত ২৫ মে আবু সাইদ ও তার লোকজন এসে জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেন। পরে ৩১ তারিখ সেই প্রাচীর মেরামত ও জায়গা ফাঁকা না রেখে একটি ঘড় নির্মাণ করতে গেলে বিবাদীরা লাঠিসোটা, হাসুয়া-বটি নিয়ে এসে অতর্কিত হামলা করেন। হামলায় রফিকুল ইসলাম আহত হলে তাকে বাঁচাতে অপর ভাইয়েরা এগিয়ে এলে তাদেরও মারপিট করা হয়। হামলার অপর আহতরা হলেন পাইকপাড়ার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, আনোয়ারুল ইসলাম বিশ্বাস ও রিমা বিশ্বাস। এদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, আনোয়ারুল ইসলাম বিশ্বাসের আঘাত গুরতর। হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম বিশ্বাস গত ১ জুন দুপচাঁচিয়া থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩ থেকে ৪ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন, আবু সাইদ ম-ল, খলিল মন্ডল, জিব্রাইল মন্ডল, মো. ফারুক, মো. মোস্তাকিন, সাজু মন্ডল, হাবিব মন্ডল, মোছা. হাওয়া বেগম ও মোছা. রুবি। এদের সবার বাড়ি উপজেলার পাইকপাড়ায়।
মামলার বাদী রফিকুল ইসলামের সাথে শুক্রবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উক্ত ঘটনায় ন্যায়ের পক্ষে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ তাদের আন্তরিক সহযোগিতা করেছেন। হামলার শিকার তারা ৩ জন স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিলেও ২ জনের অবস্থা খুবই গুরুতর তারা এখনো বগুড়া শজিমেকে চিকিৎসাধীন। তাদের যে ন্যায্য জমি সেটি রক্ষা এবং তাদের উপর যেন পুনরায় কোন হামলা না হয় সে বিষয়ে অসহায়ত্বের সুরে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন রফিকুল ইসলাম। এদিকে মুঠোফোনে বিবাদীদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাথে কোনভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

উক্ত ঘটনা প্রসঙ্গে দুপচাঁচিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান আলী জানান, প্রাথমিক তদন্ত শেষে উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রায় ৮টি ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে এবং বিষয়টি তারা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছে। তবে এজাহারের ৭ জন আসামী ইতিমধ্যেই জামিন নিয়েছেন তবে বাকীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে। তিনি আরো জানান, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তারা সর্বদা জিরো টলারেন্স। অপরাধ করলে কেউ ছাড় পাবেনা মর্মে তিনি সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানান।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button