জাতীয়

মামুনুল সমর্থকরা ভুয়া খবর ছড়াচ্ছে গণমাধ্যমের নামে

ফেসবুকে প্রতিদিনই শত শত খবর দেখা যায়। দিন যত গড়াচ্ছে আরও বাড়ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার। একই সঙ্গে ছড়াচ্ছে একের পর এক ভুয়া তথ্য। যাতে অনেককেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কিন্তু কোন খবরটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা- সেটা ঠিক বুঝে ওঠা মুশকিল।

গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে এসব ভুয়া নিউজ ছড়াচ্ছে একটি চক্র। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতের নেতা মামুনুল হকের নারীকাণ্ড নিয়ে কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারী মিথ্যা নিউজ ছড়াচ্ছে। সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন জাতীয় সংবাদমাধ্যমের লোগো।‘বীর মুজাহিদ’ নামে একটি আইডি থেকে দেশের জাতীয় সংবাদমাধ্যম সময়নিউজের লোগো ব্যবহার করে মিথ্যা নিউজ শেয়ার করেছেন। যেখানে শিরোনাম করা হয়েছে, ‘নীল বোরকা পড়া মেয়েটি মামুনুল হকের স্ত্রী ছিল না, সম্পূর্ণই ছিল যুবলীগের চক্রান্ত।’ ওই পেজে শেয়ার দিয়ে ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘সত্য কখনো গোপন রাখা যায়

মো. শাহরিয়ার নামে আরও একটি আইডি থেকে মামুনুল হক ও সেই নারীর ছবি দিয়ে ছড়ানো হয়েছে মিথ্যা খবর। যেখানে যুগান্তরের বরাত দিয়ে লেখা হয়েছে, ‘এই মেয়েটি মামুনুল হকের স্ত্রী ছিল না, ভুল প্রচারের জন্য দুঃখিত’।

এছাড়া মামুনুল হকের ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ দাবি করা ওই নারীর ছেলে আব্দুর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে তিন মিনিট দুই সেকেন্ডের একটি বক্তব্য দেন। যা মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিওটি মিথ্যা বলে একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমের লোগো ব্যবহার করে ‘মোহাম্মদ মাহদী হাসান’ নামে একটি আইডি।আরবিতে লেখা ‘মোহাম্মদ মাহদী হাসান’ নামের ওই আইডি থেকে দেশের জাতীয় দৈনিক ‘যুগান্তরের’ লোগো ব্যবহার করে লেখা হয়েছে ‘মামুনুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী সেই ছেলে লাইভে এসে ক্ষমা চাইলো’। ভুয়া নিউজটি নিজের ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে ক্যাপশনে লিখেন, ‘ আমি মিথ্য বলেছি! অতপর কেঁদে কেঁদে ক্ষমা চাইলো অভিযোগকারী সেই ছেলে’। ওই ভুয়া নিউজের স্ক্রিনশর্ট দিয়ে ‘মোহাম্মদ মাহদী হাসান’ ক্যাপশনে লিখেন, ‘আর কত নাটক করবে?  বাংলাদেশের মানুষ এখন আর এত বলদ না যে, তোমরা যা দিবে তাই গিলে খাবে। শেষ পর্যন্ত নাটকের অভিনেতা লাইভে কেঁদে কেঁদে মাফ চাইল।’এছাড়াও হেফাজতের নেতা মামুনুল হকের নারী কেলেঙ্কারি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের বরাত দিয়ে ছড়ানো হয়েছে মিথ্যা বিবৃতি। যা সঠিক নয়। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি এ ধরনের কোনও বিবৃতি দেননি। এছাড়া এ বিষয়ে কাউকে বিভ্রান্ত হতে নিষেধ করেছেন তিনি।শুধু তাই নয়, দেশের অন্যান্য জাতীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে মিথ্যা নিউজ ছড়াচ্ছে মামুনুল ভক্তরা। যা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত ৩ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক এক নারীকে নিয়ে সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে যান। পরে সেখানে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয় লোকজন। হেফাজতের নেতাকর্মীরা ওই রিসোর্টে হামলা চালিয়ে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন মামুনুল হককে। এরপর মামুনুল হকের একাধিক অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়। যেখানে ওই নারীকে নিজের স্ত্রী হিসেবে প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেন মামুনুল। এরপর থেকেই মামুনুল কাণ্ড নিয়ে দেশজুড়ে চলছে তোলপাড়।এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েই সমালোচনা চলছে দেশজুড়ে। গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর দিনে জুমার নামাজের পর মসজিদ থেকে বেরিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় হেফাজতকর্মীরা। মসজিদের উত্তর গেটের সামনে রাস্তার পাশে যানবাহনে আগুন দেয়। পুলিশের দিকে বৃষ্টির মতো ঢিল ছোড়ে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও জলকামান ব্যবহার করে।এছাড়া গত ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধ্বংসযজ্ঞ চালায় হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মীরা। পুরো জেলাশহর জুড়ে চালানো হামলায়  শতাধিক সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা, বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়। হেফাজত কর্মীদের সেই হামলা থেকে বাদ পড়েনি রেল স্টেশন, ভূমি অফিস, ট্রেন, পুলিশ লাইন, সদর থানা, হাইওয়ে থানা ও টোল প্লাজা। এমনকি হামলায় দেশের সংস্কৃতির অন্যতম তীর্থস্থান সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে হেফাজত। -সময় টিভি

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button