বিনোদন

কেমন হলো অনন্ত জলিলের শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ছবির ট্রেলার?

‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ১০০টি সিনেমার বাজেটের সমান ‘দিন- দ্য ডে’ ছবির বাজেট!’-সংবাদ সম্মেলন করে এমনটাই জানিয়েছিলেন এই ছবির প্রযোজক ও অভিনেতা অনন্ত জলিল। অথচ তার অভিনীত বাংলাদেশ-ইরানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ছবিটির ট্রেলার দেখে বিরক্তি প্রকাশ করছে বেশির ভাগ সিনেমাপ্রেমী দর্শক।কী আছে ট্রেলারে, যা দেখে দর্শক বিরক্ত?

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ি সোমবার (১৫ মার্চ) অনন্ত জলিলের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পায় ট্রেলারটি। প্রায় পৌনে তিন মিনিটের ট্রেলারের বেশির ভাগ জুড়েই বোমা-মিসাইল কিংবা ভারি অস্ত্রের ঝনঝনানি দেখা গেছে। এমন সংঘাতের দৃশ্য হরহামেশায় হলিউড কিংবা বলিউডের সিনেমায় দেখে থাকেন দর্শক। এই ছবির অ্যাকশন নিয়ে তাই বেশ কৌতূহলী বাংলা সিনেমাপ্রেমীরা। তবে দর্শক বিরক্ত ছবিতে ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস এর যথেচ্ছা ব্যবহার নিয়ে।

বলিউডের অল টাইম ব্লকবাস্টার এস এস রাজামৌলি পরিচালিত ‘বাহুবলী’ সিনেমায় উন্নত মানের ভিএফএক্সের ব্যবহার তাক লাগিয়ে দিয়েছিল উপমহাদেশের সিনেমাপ্রেমীদের। ফলে দিনকে দিন এর ব্যবহার বেড়েই চলেছে ভারতীয় সিনেমায়। অথচ অনন্ত জলিলের সিনেমায় ভিএফএক্স এর ব্যবহার সিনেমাপ্রেমী দর্শকের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে। অন্তত এই প্রযোজক-নায়কের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও চলচ্চিত্রের বিভিন্ন গ্রুপগুলোর দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হবে।

তুলনামূলক ব্যয়বহুল হওয়ায় বাংলাদেশের সিনেমায় ভিএফএক্স এর ব্যবহার প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু অনন্ত জলিলের শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘দিন- দ্য ডে’তে ভিএফএক্স এর ব্যবহার নিয়ে কৌতূহলী ছিলো দর্শক। ট্রেলারে প্রকাশের পর তাই সবচেয়ে বেশি মন্তব্য চোখে পড়েছে ‘ভিএফএক্স’ এর হাস্যকর ব্যবহার নিয়ে।

ট্রেলার দেখে নাজমুল হোসেন নামের এক দর্শক লিখেছেন, ‘অ্যাকশনে ভরপুর একটা সিনেমা, সব ঠিক আছে তবে বিগ বাজেটের মুভি হিসেবে ভিএফএক্স আরো ভালো হওয়ার দরকার ছিলো।’

অন্য আরেকজন দর্শক ট্রেলারের নীচে মন্তব্য করেন, ‘১০০ কোটি টাকা বাজেটের মুভির এমন ভিএফএক্স’ কেন? কার্টুন দেখতে কি কেউ হলে যাবে?’

ইমরান নামের এক দর্শক লিখেছেন, ‘এসব ভিএফএক্স’গুলো মোবাইল দিয়ে সম্ভব! সিনেমার ট্রেইলার তো নয়, যেন গেমিং চলতেছে।’

অভিরাজ নামের একজন লিখেছেন, ‘পানিতে পড়া মিসাইল এবং একটি গুলির দৃশ্য গ্রিন স্ক্রিন এর ভিএফএক্স সিস্টেমে। এই দুটো ছাড়া সবকিছু ঠিক আছে। এত বড় মুভিতে এদুটো একদমই বাজে দেখাচ্ছে।’

অনেকে ভিএফএক্স এর সমালোচনা করলেও অনন্ত’র উদ্দেশে ‘সৎ পরামর্শ’ও দিয়েছেন। বলেছেন, সিনেমা মুক্তি দিতে এখনও হাতে অনেক সময়। এরমধ্যে অনন্তের উচিত ভালো ভিএফএক্স ব্যবহারের মধ্য দিয়ে দর্শককে চমকে দেয়া।

এছাড়াও ট্রেলারে সাউন্ড নিয়েও আছে অনেকের অভিযোগ। কেউ বলছেন, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের জন্য ট্রেলারে কারো সংলাপ স্পষ্ট বোঝা যায়নি। তবে এতো এতো সমালোচনা ও নেতিবাচক মন্তব্যের বিপরীতে এখনও কোনো কথা বলেননি অনন্ত।

প্রায় সাত বছর পর অনন্ত জলিল তার নতুন সিনেমা ‘দিন দ্য ডে’ নিয়ে আসছেন। বাংলাদেশ ও ইরানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত সিনেমাটিতে রেকর্ড পরিমাণ বাজেট ব্যয় হয়েছে। সিনেমাটির বাজেট বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১০০ কোটি টাকা যা মার্কিন ডলার হিসেবে ১২ মিলিয়ন।

ইরানের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় বানানো ‘দিন দ্য ডে’র বাংলাদেশের অংশ প্রযোজক অনন্ত জলিল। এ বিষয়ে তিনি সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে জানান, বাংলাদেশে শুটিংয়ে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে তিনি সেই অংশটুকুতে লগ্নী করেছে। অন্যান্য দেশের শুটিংয়ে ব্যয় বহন করেছে ইরানী প্রযোজক।

যারা বাংলাদেশ থেকে প্রবাসে যান তারা বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হন। বাংলাদেশ, তুরস্ক, আফগিস্তান, ইরান এই চারদেশ মিলিয়ে ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমায় উঠে আসবে সেইসব লোহমর্ষক প্রেক্ষাপট। ছবিতে অনন্ত ছাড়াও আছেন তার স্ত্রী ও চিত্রনায়িকা বর্ষা। ছবিটি পরিচালনা করেছেন ইরানী নির্মাতা মুর্তজা অতাশ জমজম।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button