সারাদেশ

দেশে জানুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৮৪

দেশে গেল জানুয়ারি মাসে মোট ৪২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৪ জন নিহত এবং ৬৭৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। যাদের মধ্যে নারী রয়েছেন ৯২ জন ও শিশু ৪৭টি। সংস্থাটি আজ শনিবার দেশের ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ১৫৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৬৮ জন, যা মোট নিহতের ৩৪ দশমিক ৭১ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১৪৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ৩০ দশমিক ১৬ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৩ জন, অর্থাৎ ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

এই একই সময়ে ৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত, ৪ জন আহত এবং ৬ জন নিখোঁজ হয়েছে। ১১টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনে প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় বাস যাত্রী ৩১, ট্রাক যাত্রী ১৪, পিকআপ যাত্রী ৪, ট্রলি যাত্রী ১, ট্রাক্টর যাত্রী ৩, মাইক্রোবাস যাত্রী ২, প্রাইভেটকার যাত্রী ৭, অ্যাম্বুলেন্স ২, জীপ যাত্রী ৭, সিএনজি যাত্রী ১১, ইজিবাইক-অটোরিকশা-মিশুক-লেগুনা-টেম্পু যাত্রী ৫৫, নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-বোরাক যাত্রী ২১, টমটম ৪, বাই-সাইকেল আরোহী ৬, মাটিকাটার ভেকু মেশিন গাড়ি শ্রমিক ১, এবং হ্যালোবাইক আরোহী ১ জন।  

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৫৩টি (৩৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১০৭ টি (২৫ দশমিক ০৫ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৯৭টি (২২ দশমিক ৭১ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে, ৫৯টি (১৩ দমমিক ৮১ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ১১টি (২ দশমিক ৫৭ শতাংশ) সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনাগুলোর ৮৮টি (২০ দশমিক ৬০ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৩৯টি (৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১৪৪টি (৩৩ ৭২ শতাংশ) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৪৭টি (১১ শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৯টি (২ দশমিক ১০ শতাংশ) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৬ দশমিক ২২ শতাংশ, প্রাণহানি ২৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ, প্রাণহানি ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৯ দশমিক ২০ শতাংশ, প্রাণহানি ২০ দশমিক ০৪ শতাংশ, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১০ দশমিক ৭৭ শতাংশ, প্রাণহানি ১২ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৭ দশমিক ০২ শতাংশ, প্রাণহানি ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ, প্রাণহানি ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ, প্রাণহানি ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, প্রাণহানি ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১১২টি দুর্ঘটনায় নিহত ১২৮ জন। সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে। ৩২টি দুর্ঘটনায় নিহত ২৭ জন। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৩১টি দুর্ঘটনায় ৩৬ জন নিহত। সবচেয়ে কম ঝালকাঠি জেলায়। ২টি দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য ৭ জন, সেনা সদস্য ২ জন, স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষক ১৬ জন, চিকিৎসক ৩ জন, ব্যাংক কর্মকর্তা ৩ জন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর টেলিফোন অপারেটর ১ জন, দেশীয় পর্যটক ৪ জন, ক্রিকেটার ১ জন, মানসিক প্রতিবন্ধি ৩ জন, একাত্তর টিভির ভিডিও এডিটরসহ সাংবাদিক ৪ জন, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৯ জন, ঔষধ ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিক্রয় প্রতিনিধি ২৩ জন, পরিবহন শ্রমিক ২ জন, প্রবাসী শ্রমিক ২ জন, নির্মাণ শ্রমিক ৪ জন, পোশাক শ্রমিক ৬ জন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিক ৩ জন, পল্লী বিদ্যুতের সুপারভাইজার ১ জন, বিটিসিএল’র লাইনম্যান ১ জন,  ইটভাটা শ্রমিক ৭ জন, মাটিকাটা শ্রমিক ৩ জন, কাঠ মিস্ত্রি ২ জন, নৈশ প্রহরী ৩ জন, স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ৪৬ জন, ইউপি সদস্য ২ জনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ৭ জন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৯ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button