নব্যদীপ্তি_শুদ্ধ চিন্তায় তারুণ্য

প্রারব্ধ স্ফূরণ – চেতনায় বিজয়

রক্তভেজা যে মাটির অর্থ জাগ্রত উন্মেষ,
সে গৌরব চির অম্লান
হে তরুণ, জাগো বীর্যবান,
বিনাশহীন এ নব সূর্যস্নান
নতুন প্রভাতের উপকণ্ঠে ঐ যে! আমার সোনার বাংলাদেশ।

শুভ জন্মদিন লাল সবুজ!
আজ মহান বিজয় দিবস। ১৬ ডিসেম্বর, শুধু একটি তারিখ না – একটি প্রেরণা, একটি অধিকার, একটি আন্দোলন, স্বপ্নপূরণ, গৌরবান্বিত বিজয়। বিজয় দিবস- সেই বিজয় যাকে দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে ছিল সাত কোটি মানুষ, যার জন্য এক কোটি মানুষ সর্বস্ব ত্যাগ করে দেশছাড়া হয়েছিল, যার জন্য চোখে স্বপ্ন নিয়ে কবিতা লিখেছিলেন এক রাজনীতির কবি। কখনো তা ফুটে ওঠে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিবৃতিতে, কখনো বা সদ্য হাতেখড়ি পাওয়া ছোট্ট শিশুর রঙ-তুলির কারুকার্যের মাঝে।
দু’শ বছরের ইংরেজ শোষণ আর ২৩ বছরের নিপীড়ন- গণহত্যার অবসান বলতেই প্রতিটি বাংলাদেশির হৃদয় উপকূলে যে শব্দ সমুদ্রের বিস্তীর্ণ জলরাসির ন্যায় বারবার ফিরে আসে, সেই পাঁচ বর্ণের শব্দটি “বিজয়”।
বিজয় অর্থ শুধু ১৬ ডিসেম্বর নয়! বিজয় অর্থ শুধু একাত্তর নয়। বিজয় – একটি অভ্যুদয়। পরাজয়ের ধুসর কালো পর্দাকে ছিড়ে ফেলে সজীবতার সংগীতে সুর মেলানো।
সাত মার্চের সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধু এক জনস্রোতে জোয়ার জাগিয়ে বলেছিলেন, ” দাবায়ে রাখতে পারবা না।” সেই চেতনার এক সুচারু বহিঃপ্রকাশ।

বাংলাদেশকে দাবায়ে রাখা যায় না। কেউ পারে না।
ত্রিশ লক্ষ মানুষ তো আর মিছিমিছি জীবন দেয়নি। তাঁরা দেখিয়ে দিয়েছে বিশ্ব দরবারে। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সামরিক শক্তিধর দেশের মসনদ যেখানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নাম শুনে কেঁপে ওঠে, সেদেশের বিরুদ্ধে – কোনো অস্ত্র নেই, কোনো প্রশিক্ষণ নেই! অথচ তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়তে ভয় করেনি, লাল সবুজের নিশান উড়িয়ে তাঁরা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে শুধু ঐকান্তিক চেতনা আর সাহসকে ভর করে
অবাক পৃথিবী, অবাক করেছ তুমি- বাংলাদেশ।

বিজয়ের ৫০ তম বর্ষে পদার্পণ করে আজ প্রতিটি বাংলাদেশি গর্বিত। হ্যাঁ এটি সেই বাংলাদেশ – যার বয়স হয়তো আজকের স্কুল পড়ুয়া ছাত্রদের অনেকের বাবার চেয়েও কম! অথচ- বাংলাদেশের দিকে একবার তাকিয়ে দেখুন৷ কি আসাধ্য সাধন করেছে এই দেশ!
যেই বিশ্ব Bottomless busket নামে বাংলাদেশকে একনামে চিনতো, আজ তাদেরই সামনে বাংলাদেশ- এক রোল মডেল। খুব গর্ব করে বলতে ইচ্ছে করে সেইদিনের কথা, যেদিন তলাবিহীন ঝুড়ি বলা দেশেরই এক প্রেসিডেন্ট ৩০-৪০ বছর পরে তার পৈতৃক রাষ্ট্রে গিয়ে বক্তব্যে বলেছিলেন, ” যদি কেনিয়াবাসী ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে চাও, একবার বাংলাদেশের দিকে তাকাও।” [বারাক ওবামা]
এটিই বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ তার উন্নয়নের ধারায় অব্যাহত। এসেছে অনেক বাধা, হোক তা বিদেশি কিংবা দেশি! কিন্তু এ অগ্রযাত্রা – দাবায়ে রাখা যায় নি।

আজকের তরুণসমাজের কাছে এক অনন্য সুযোগ৷ আবারো দেই চেতনায় জেগে ওঠার সময় এসেছে। শুধু ভয় হয়, যেন ঐক্য কখনো বিনষ্ট না হয় যাকে নির্ভর করে এসেছিল বিজয়।
হ্যাঁ, হয়তো আজকের প্রজন্ম কাউকে বুক ফুলে বলতে পারবে না, সে ছিল কোনো ভাষা সৈনিক কিংবা এক বীর মুক্তিযোদ্ধা।
কিন্তু তার সামনেই তো সুযোগ একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, চিন্তাশীল, দক্ষ বাংলাদেশ গঠনের যেমনটা স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা।
বিজয় দিবসে সেই বাংলাদেশের প্রত্যাশায়…

জয় বাংলা।।

‘মোঃ তাহমিদুল ইসলাম
নব্যদীপ্তিশুদ্ধচিন্তায়_তারুণ্য

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button