নব্যদীপ্তি_শুদ্ধ চিন্তায় তারুণ্য

কিশোর মনে বিজয় ভাবনা

শুরু হলো ২০২০ সালে সব থেকে গৌরবময় মাস ডিসেম্বর। এই পুরো মাসে আমাদেরকে অনেক কিছু স্মরণ করে দেয়।

৯ ডিসেম্বর আমাদের নারী জাতির অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্মদিন । এরপর ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, আর ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের গৌরবময় দিন আমাদের বিজয় দিবস ।
১৯৭১ সালের প্রায় পুরো সময় জুড়েই আমাদের দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছেন। সহ্য করেছে পাকিস্তানিদের জুলুম – অত্যাচার, নিপীড়ন। ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন। এরপর ৯ মাস এরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলে। যে যেখানে যা পেয়েছিল তাই নিয়ে যুদ্ধ এ ঝাপিয়ে পরেছিল সেনারা। প্রায় ৩০লক্ষ মানুষ এই যুদ্ধে এ শহীদ হন। প্রান দেন আমাদের হাজারও মায়ের সোনার ছেলেরা। আমরা হারাই অজস্র বুদ্ধিজীবি দের। অনেক কিছু সহ্য করার পর পাকিস্তানিরা আমাদের কাছে মাথা নত করে।তাই ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি।
এই দিন কে আমরা প্রতি বছর সুন্দর করে উদযাপন করি। কিন্তু আজ অনেক বছর পেরিয়ে গেছে.. সত্যিই কি আজ আমাদের সমাজ বদলেছে? আগে আমরা স্বাধীনভাবে ঘুরতে – চলতে পারতাম না । মেয়েদের তুচ্ছ করে দেখা হতো। কিন্তু আজ ছেলে মেয়ে সবাই একসাথে কাজ করছে। বদলানোর চেষ্টা করছে কুসংস্কার আর কিছু মানুষের কুৎসিত মনোভাবকে। কিশোর আর কিশোরীরা ও এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে এবং তারা এখন অন্যায় কিছু দেখলে প্রতিবাদ করে। বিদ্যালয়ে এখন আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকা রা আমাদের সব বিষয়ে জানতে, বুঝতে সাহায্য করেন। তবে আগে নারীরা এই পড়াশোনাটাই করতে পারেনি। আসলে তখন মেয়েদের পড়তে দেয়াই হত না কিছু কুসংস্কারজনিত কারনে। নিদিষ্ট বয়সের আগেই বিয়ে দিয়ে দেয়া হতো। আজও এই প্রচলন আছে তবে আগের থেকে অনেকটাই কম। কিন্তু সত্যিই কি আমরা মেয়েরা, স্বাধীন দেশে থাকা সত্ত্বেও নিরাপদে চলতে পারছি? কেন আমাদের মেয়েদের রাস্তায় বের হলে ইভটিজিং এর শিকার হতে হয়, কেন তাদের উপর এখনো অত্যাচার করা হয়? আছে কি এই প্রশ্নের জবাব আমাদের সমাজের কাছে? জানি নেই, যদি থাকতো তাহলে ‘নুসরাত জাহান রাফি’ মেয়েটা পরীক্ষা দিতে গিয়ে জ্যান্ত আগুনে পুরে মেরে ফেলা হতো না। সবার ঘটনা টা জানা। মাদ্রাসার ছাত্রী ছিলো নুসরাত। তার অধ্যক্ষ এর নির্দেশ অনুযায়ী তাকে তার বান্ধবী সহ কয়েকজন আগুনে পুরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে। তাহলে কোথায় আমরা স্বাধীন দেশে থেকেও নিরাপদ ভাবে বাঁচতে পারছি? আজ নুসরাত এর সাথে এমন হয়েছে কাল আমাদের সাথেও হতে পারে। প্রতিনিয়ত সবার বাবা -মা চিন্তা করে তাদের মেয়েদের নিয়ে। কেন এই চিন্তা মুক্ত করতে পারেনা আমাদের দেশের আইন। অপরাধী অন্যায় করেও বুক ফুলে ঘুরে বেড়ায় রাস্তায়।
১৯৭১ সালে আমাদের দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল স্বাধীন ভাবে বাচার জন্য কিন্তু আমরা এখনো তা পারিনা। এখনো রাস্তায় বের হলে দেখা যায় ছোট সব ছেলেমেয়েরা শ্রমিকের কাজ করছে । কেউ মাথায় ইট বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পড়াশোনা না করে। কত মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে। তাই আমাদের নিজেদের আগে মন পরিস্কার করতে হবে তারপর এই দেশের উন্নয়ন হবে। তারপর সব মানুষ কে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। পরিষ্কার মনে এ দেশের সমাজের উন্নতির কথা ভাবতে হবে। কারণ এই বিজয় ছিনিয়ে আনা ভু খন্ড, মানচিত্র, এই লাল -সবুজের পতাকা শুধু আমাদের।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button