আন্তর্জাতিক খবর

আনারসের সাথে বারুদ খাইয়ে গর্ভবতী হাতি হত্যা

করোনাভাইরাসের কারণে যখন সারা পৃথিবীতে মানুষের লাশের সারি দীর্ঘ হচ্ছে, তখন মানুষের নির্মমতার সাক্ষী হলো ভারতের কেরালা। সেখানে অমানবিকভাবে সেখানে একটি গর্ভবতী হাতিকে কে বা কারা হত্যা করেছে ।

ভারতের গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টাইমসে বলা হয়, কেরালার মালাপ্পুরম জেলার একটি গ্রামের বাসিন্দারা আনারসের ভেতরে বাজি ও বারুদ ভরে তা গর্ভবতী ওই হাতিটিকে খাওয়ায়। মুখের মধ্যেই তা বিস্ফোরিত হলে গুরুতর আহত হয় হাতিটি। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে ঘণ্টা চারেক পর ২৭ মে, বুধবার সন্ধ্যার দিকে পানিতে দাঁড়ানো অবস্থায় মারা যায় প্রাণীটি।

কেরালার বন দপ্তরের মোহন কৃষ্ণন নামের এক কর্মকর্তা হাতিটির ছবি ও ঘটনার বিবরণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করার পর এই নৃশংসতা ঘটনাটি সকলের নজরে আসে।

তিনি জানান, কাছাকাছি বন থেকে ওই গ্রামে হাতির অনুপ্রবেশ নতুন কিছুই না। এদিনও গ্রামে চলে এসেছিল হাতিটি। গ্রামবাসীদের মধ্যে কেউ বারুদ-ভর্তি ওই আনারস হাতিটিকে খেতে দেয়। ক্ষুধার্ত পশুটি স্বাভাবিকভাবেই আন্দাজ করতে পারেনি বিপত্তির গন্ধ। হাতিটির মুখের মধ্যেই বাজির বিস্ফোরণ ঘটে। জখম হয় জিভ ও মুখের ভিতরের অংশ ভয়াবহভাবে জখম হয়। অসহ্য যন্ত্রণায় হাতিটি গ্রামের রাস্তা দিয়ে ছুটতে ছুটতে নিকটবর্তী ভেলিয়ার নদীতে নেমে দাঁড়িয়ে থাকে দীর্ঘক্ষণ। কিন্তু এতকিছুর পরেও একজনকেও আহত করেনি সে। কোনোরকম ক্ষতি করেনি গ্রামের কোনো বাড়ির, গাছপালা বা বাগানের।

মোহন কৃষ্ণন জানান, যন্ত্রণা লাঘব করার শেষ চেষ্টা করেছিল হাতিটি। সংক্রমণ ঠেকাতে নদীতে শুঁড় ও মুখ ডুবিয়ে রেখেছিল।

বিকালের দিকে সংবাদ পেয়ে বন দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তারা দুটি পোষা হাতির সাহায্যে ওই বুনো হাতিটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। সাহায্যের জন্য নিজেই উঠে আসে সে। হয়তো বা সে বুঝে গিয়েছিল সময় ফুরিয়ে এসেছে তার। বিকাল ৪টার দিকে হাতিটি মারা যায় বলেও জানান এ বন কর্মকর্তা।

মৃত ওই হাতিটির ময়নাতদন্তে জানা যায়, অন্তঃসত্ত্বা ছিল হাতিটি। ১৮ মাসের মধ্যেই সে সন্তান প্রসব করত। কিন্তু মানুষের নৃশংস আচরণে নিজের সাথে গর্ভের সন্তানকেও প্রাণ হারাতে হলো। পরে বনবিভাগের কর্মীরা লরিতে করে জঙ্গলের ভেতর নিয়ে মৃতদেহটি পুড়িয়ে দেন।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button