স্বাস্থ্য

গণস্বাস্থ্যের কিটের সক্ষমতা পরীক্ষা করবে সিডিসি

করোনাভাইরাস সনাক্তকরণ র‍্যাপিড টেস্টিং কিট উদ্ভাবন করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। তবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অভিযোগ তাদের এই কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে দেখা নিয়ে জন্য গড়িমসি করছে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মহা পরিচালক ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় সকল তথ্য বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ সেন্টারে (বিএমআরসি) জমা দিয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিটের সক্ষমতা কতটা, সে বিষয়ে পরীক্ষার জন্য বিএমআরসি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) কিটের সক্ষমতা পরীক্ষার জন্য ৮০০ কিট চেয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাছে থেকে।

গত শনিবার করোনাভাইরাস শনাক্তের কিট সরকারের কাছে হস্তান্তরের জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সংস্থাটি জানায়, তাদের উদ্ভাবিত ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট’ কিটের মাধ্যমে সহজে ও স্বল্পমূল্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা সম্ভব। অনুষ্ঠানে কিট পরীক্ষা ও মতামতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসির প্রতিনিধির কাছে কিট হস্তান্তর করা হয়।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার জানান, ‘কিটের প্রটোকল তৈরির জন্য কোনো কন্ট্রাক্ট রিসার্চ ফার্মের (সিআরও) সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হব না। এই পদ্ধতিতে লেনদেনের সুযোগ থাকতে পারে। কিটের কাগজপত্র বিএমআরসিকে দেওয়া হয়েছে। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলেছে।’

বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নেওয়া নতুন করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে বাংলাদেশ এখন আমদানি করা কিটের উপর নির্ভর করছে। তার মজুদ এখনও যথেষ্ট রয়েছে বলে জানিয়ে আসছে সরকার। সরকারি প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর আরটি-পিসিআর বা রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ পলিমেরেজ চেইন রিঅ্যাকশন পদ্ধতিতে করোনাভাইরাস শনাক্ত করে, যা নির্ভুল ফলাফল দেয় বলে স্বীকৃত। এতে নমুনা হিসেবে রোগীর লালা কিংবা শ্লেষ্মা পরীক্ষা করা হয়। নমুনায় করোনাভাইরাস আছে কি না তা বুঝতে ব্যবহার করতে হয় বিশেষ রি-এজেন্ট।

এই পদ্ধতিতে রোগীর নমুনায় করোনাভাইরাসের জিনোম বৈশিষ্ট্যের কোনো জেনেটিক বিন্যাস পাওয়া যায় কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। অন্যদিকে করোনাভাইরাস শনাক্তের অন্য পদ্ধতি র‌্যাপিড টেস্টে রক্তের নমুনায় অ্যান্টিবডির উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়।
কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে পাঁচ থেকে ১০ দিন সময় লাগতে পারে। ফলে, অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার আগে র‌্যাপিড কিটে নমুনা পরীক্ষা করা হলে ফলাফল নেগেটিভ হবে। অর্থাৎ, শরীরে ভাইরাস থাকলেও এই পরীক্ষায় তা ধরা পড়বে না। আবার কেউ আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠলেও তার রক্তে অ্যান্টিবডি থেকে যাবে। ফলে তার শরীরে ভাইরাস না থাকলেও র‌্যাপিড কিটের টেস্ট ফলাফল পজিটিভ আসবে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র র‌্যাপিড টেস্টের কিট তৈরি করেছে, যার নাম দিয়েছে ‘র‌্যাপিড ডট ব্লট’। তারা বলছে, এই পদ্ধতিতে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য খরচ হবে তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা।

সিয়াম সাদিক আফ্রিদি/ডেস্ক রিপোর্ট

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button