উপজেলাধুনট উপজেলাপাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়বিশ্ববিদ্যালয়

বগুড়ার অদম্য হাফিজুর রহমান জবি গ্রাজুয়েট

প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রথম সমাবর্তনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৯ হাজার প্রাক্তন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন। তাদের মধ্যে অনন্য একজন হলেন বগুড়ার হাফিজুর রহমান। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে, মুখ দিয়ে কলম ধরে লিখেই অনার্স মাস্টার্স শেষ করে হয়েছেন গ্রাজুয়েট।

হাফিজুর রহমান এর বাড়ি বগুড়ার ধুনটের বেলকুচি গ্রামে। বাবা মফিজউদ্দীন এবং মা ফিরোজা বেগমের চতুর্থ পুত্রসন্তান তিনি।

হাফিজুর রহমান ২০০১ সালে তার গ্রামের ব্র‍্যাক স্কুলের মাধ্যমে শিক্ষাজীবনে পা রাখেন। এরপর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় তিনি ধুনট এনইউ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ২০০৭ সাল থেকে তিনি মুখে লিখতে শুরু করেন।

২০০৯ সালে তিনি ৪.১৯ পয়েন্ট নিয়ে মানবিক বিভাগ থেকে মাধ্যমিক এবং ২০১১ সালে ৩.৫০ পয়েন্ট নিয়ে একই বিভাগ থেকে রাজশাহী বোর্ডের অধীনে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন।

এরপর তিনি নিজে নিজে বাসায় প্রস্তুতি নেন এবং ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পান।

হাফিজুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১-১২ সেশনে ইসলাম ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে ভর্তি হন। বিভাগীয় চেয়ারম্যান এর অনুমতি স্বাপেক্ষে তিনি বাসায় থেকে পড়াশুনা করেন এবং পরীক্ষার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পরীক্ষা দিতেন। এভাবেই তিনি তার গ্র‍্যাজুয়েশন শেষ করেন ভাল পয়েন্ট নিয়ে।

সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টের পর থেকে হাফিজুর রহমান এখন একজন আলোচিত ব্যক্তি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন উপলক্ষে হাফিজুর রহমানের গাউন পরা ছবি পোস্ট করেছেন ওবায়দুর রহমান নামের এক ব্যক্তি।

‘কোটা সংস্কার চাই (বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ)’ ফেসবুক পেজে তিনি ছবিটি পোস্ট করেছেন।এরপরই ছবিটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়।

ওবায়দুর রহমান লিখেছেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ম ব্যাচের ছাত্র হাফিজ ভাই। হাত, পা অকার্যকর! মুখ দিয়ে লিখেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। জবির প্রথম সমাবর্তনে অন্যদের মত হাফিজ ভাইও গাউন পড়েছেন। হার না মানা অদম্য জবিয়ান!’

উল্লেখ্য, হাফিজুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই টি শার্ট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button