আন্তর্জাতিক খবর

হোয়াইট হাউসের দ্বারপ্রান্তে এগিয়ে আছেন জো বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক দিন পার করার পর ফলাফলের যে চিত্র হাতে এসেছে, তাতে পরিস্কারভাবে এগিয়ে আছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন।

বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত যেসব অঙ্গরাজ্যের ফলাফল পাওয়া গেছে তাতে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় জো বাইডেন এগিয়ে আছেন।

আমেরিকান গণমাধ্যম ফক্স নিউজ বলছে, ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৪৩টির প্রাথমিক ফল ঘোষণা হয়েছে। এর ফলে বাইডেন মোট ২৬৪টি এবং ট্রাম্প মোট ২১৪টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন।

সব মিলিয়ে ইলেকটরের সংখ্যা ৫৩৮টি। আর জয়ের জাদুসংখ্যা ২৭০। আরো সাত রাজ্যের ফল ঘোষণা বাকি। এই সাত রাজ্যই নির্ধারণ করবে ট্রাম্প আর বাইডেনের ভবিষ্যৎ।

এরইমধ্যে ব্যাটলগ্রাউন্ড উইসকনসিনে ১০টি ইলেকটোরাল ও মিশিগানের ১৬টি ইলেকটোরাল ভোট জিতে নিয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন।

ফক্স নিউজের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৬৪ ইলেক্টোরাল ভোট নিয়ে অবস্থান করছেন জয়ের দ্বারপ্রান্তে। এখন এগিয়ে থাকা আরেক ব্যাটলগ্রাউন্ড নেভাদায় (৬টি ইলেক্টোরাল ভোট) জয় পেলেই ২৭০ ইলেক্টোরাল ভোটের সেই কাঙ্ক্ষিত ‘ম্যাজিক ফিগার’।

গত নির্বাচনে জেতা উইসকনসিন ও অ্যারিজোনাতেও হেরেছেন ট্রাম্প। প্রায় দুই যুগ পর রিপাবলিকান ঘাঁটি অ্যারিজোনায় ডেমোক্র্যাটদের প্রথম জয় এনে দিলেন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন।

নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, মিশিগানে ২৬ লাখ ৮৪ হাজার ২০০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছে বাইডেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৬ লাখ ১৭ হাজার ৬০ ভোট।

মিশিগানের আগে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যেও জয়ী হন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন। এ রাজ্যের ১০টি ইলেকটোরাল কলেজের ভোট পড়েছে তার ঝুলিতে।

উইসকনসিনে বাইডেন পেয়েছেন ১৬ লাখ ৩০ হাজার ৩৮৯ ভোট। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প পেয়েছেন ১৬ লাখ ৯ হাজার ৮৭৯ ভোট।

সর্বশেষ সুইং স্টেট উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে জয়ী হন বাইডেন। এ অঙ্গরাজ্যে ১০টি ইলেকটোরাল ভোট বাইডেনের ঝুলিতে যুক্ত হয়। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এ অঙ্গরাজ্যে জয় পান ট্রাম্প।

এ সময় পেলসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া ও আলাস্কায় এগিয়ে ছিলেন ট্রাম্প। তবে এর মধ্যে পেনসিলভানিয়া ছাড়া অন্য রাজ্যগুলোতে ক্রমশ বাইডেনের ভোট বাড়ছিল।

নেভাদায় বর্তমানে মাত্র দশমিক ছয় শতাংশ ভোটে এগিয়ে আছেন বাইডেন। সেখানে এখন পর্যন্ত গণনা হওয়া ভোটের ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট। তুমুল লড়াই হওয়া এই রাজ্যটির জয়-পরাজয়ের ওপর পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হতে যাচ্ছেন তার অনেকখানি নির্ভর করছে।

এছাড়া এখন পর্যন্ত যেসব রাজ্যের ভোটের ফলাফল পাওয়া যায়নি সেগুলোর মধ্যে আলাস্কায় রয়েছে তিনটি ইলেক্টোরাল ভোট, জর্জিয়ায় ১৬টি, নর্থ ক্যারোলিনায় ১৫টি এবং পেনসিলভানিয়ায় ২০টি।

নেভাদায় বাইডেনের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর এগুলোর সবগুলোতেও যদি ট্রাম্প জেতেন তাহলেও তার ইলেকটোরাল ভোট দাঁড়াবে ২৬৮টিতে। ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করতে পারবেন না তিনি।

মোট সম্ভাব্য ভোটের ৮৬ শতাংশ গণনা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বাইডেন। আর ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট। দু’জনের ভোটের ব্যবধান ৮ হাজারের কিছু বেশি।

তবে বাইডেন এগিয়ে থাকার সময়ই নিজেকে জয়ী দাবি করে ট্রাম্প ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন। এরইমধ্যে মিশিগান, উইসকনসিন ও পেনসিলভানিয়ার গণনায় আপত্তি তুলে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছে ট্রাম্প শিবির।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভোট পেতে যাচ্ছেন বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভোট পেতে যাচ্ছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেন।

ইতোমধ্যে তার ঝুলিতে ছয় কোটি ৯১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৫৫টি ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে। সম্পূর্ণ ফলাফল প্রাপ্তির পর এ সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন বারাক ওবামা।

২০০৮ সালের নির্বাচনে ৬ কোটি ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার ৫১৬ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, ১৯০৮ সালের পর ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোটার অংশ নিয়েছে।

ওই বছর মোট ভোটারের ৬৫ শতাংশ ভোট দিতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু এবার ভোট দিয়েছে ৬৭ শতাংশ ভোটার। যুক্তরাষ্ট্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ১৬ কোটি।

১২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট
যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ কোটির বেশি ভোটার এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। ১২০ বছরের মধ্যে কোনো নির্বাচনে এত মার্কিন নাগরিক ভোট দেননি।

‘ইউএস ইলেকশন প্রোজেক্ট’ প্রাথমিক পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এ তথ্য তুলে ধরে বলেছে, এবার ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৬৬ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ১৯০০ সালের পর সর্বোচ্চ। ওই বছর ৭৩ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল।

ইউএস ইলেকশন প্রোজেক্টের প্রতিষ্ঠাতা বুধবার এক টুইটে বলেন, ১২০ বছরের মধ্যে ২০২০ সালেই সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে। এখনও বেশ কিছু ভোট গণনা করা বাকি।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button