আন্তর্জাতিক খবর

কাল জানা যাবে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট: ট্রাম্প / বাইডেন

আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। মার্কিন নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ গোটা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের। কে হবেন সেই ব্যক্তি, যিনি বসবেন বিশ্বের বড় মোড়লের আসনে। পুরাতন ব্যক্তি নাকি নতুনের বিজয়?

দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডেমোক্রেট পার্টির জো বাইডেন ও রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট। উভয়ই জোর নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। করোনাভাইরাস থেকে সদ্য সেরে উঠে বিভিন্ন প্রচার সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন ট্রাম্প।

জনমত জরিপ বলছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৪ রাজ্যসহ প্রায় পুরো দেশেই এগিয়ে ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন। শুধুমাত্র ব্যাটেলস্টেট হিসেবে পরিচিত আইওয়াতে এগিয়ে ট্রাম্প। জয় নিশ্চিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস রয়েছে এমন রাজ্যগুলোতে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা।

গার্ডিয়ানের জরিপ বলছে, ফল নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য আইওয়াতে ডেমোক্রেট প্রার্থী বাইডেনের চেয়ে সাত পয়েন্টে এগিয়ে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতবারের নির্বাচনেও অল্প ব্যবধানে এই রাজ্যে জিতেছিলেন ট্রাম্প। তবে আইওয়াতে এগিয়ে থাকলেও এই জরিপ বলছে, বাকি সব রাজ্যেই ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে বাইডেন। নিউইয়র্ক টাইমসের জরিপও চার গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য অ্যারিজোনা, ফ্লোরিডা, পেনসিলভেনিয়া এবং উইসকনসিনে বাইডেনকে এগিয়ে রেখেছে।

শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যাটেলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্যগুলোতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন দুই প্রার্থী ট্রাম্প ও বাইডেন। ভোটের আগে মিশিগান, আইওয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, জর্জিয়া ও ফ্লোরিডাসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে সমাবেশ করছেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় ইলেকটোরাল ভোটে। জয়ের জন্য ৫৩৮ ভোটের মধ্যে প্রয়োজন হয় ২৭০টি। ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, নিউইয়র্ক, ইলিনয়, পেনসিলভেনিয়া, ওহাইয়ো, জর্জিয়া, মিশিগান, নর্থ ক্যারোলাইনা, নিউজার্সি- এই ১১ রাজ্যেই রয়েছে ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট। তাই এই রাজ্যগুলোতে যিনি জয় পাবেন, তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া অনেকটাই নিশ্চিত হবে।

প্রায় ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়েছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন। পেশায় আইনজীবী বাইডেন প্রথম সিনেটে জয়লাভ করেন ১৯৭২ সালে মাত্র ৩০ বছর বয়সে। তাক লাগিয়ে দেন দুই মেয়াদে সিনেটর থাকা এক রিপাবলিকান প্রার্থীকে হারিয়ে।

২০১৬ সালের নির্বাচনেও প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন বাইডেন। কিন্তু ছেলের মৃত্যুর কারণে সিদ্ধান্ত পাল্টান। এর আগে, ১৯৮৭ সালে একবার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েও প্রত্যাহার করতে হয়েছিল তাকে।

২০০৮ সালেও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন বাইডেন। শেষ পর্যন্ত ডেমোক্রেট শিবির বারাক ওবামাকে বেছে নেয়ায় হোঁচট খায় সে উদ্যোগ। অবশ্য পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ে ঝানু রাজনীতিক বাইডেনকেই ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেন ওবামা।

অন্যদিকে, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প গেলবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে পরিচিত ছিলেন টিভি তারকা ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী হিসেবে। হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হন তিনি।

১৯৮৭ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। ২০০০ সালে রিফর্ম পার্টির প্রার্থিতার দৌড়েও ছিলেন।

এরপর ২০১৫ সালে মেক আমেরিকা গ্রেট এ্যাগেইন- ক্যাম্পেইন চালিয়ে নির্বাচনে নামেন ট্রাম্প। অভিনব প্রচারে পেয়ে যান রিপাবলিকানদের সমর্থনও।

আলোচনায় আসেন মার্কিন অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা, মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ এবং মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হওয়ার বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়ে।

প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই নানা সংকট অতিক্রম করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। খোদ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেই ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন বেশ কয়েকজন নারী।

ট্রাম্পের চার বছরের মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র কোনো যুদ্ধে না জড়ালেও তার নানা সিদ্ধান্ত বহু বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়াকে জটিল সমীকরণের মুখোমুখি করে দেন তিনি। ইরানের সঙ্গে শান্তি আলোচনার মধ্যেই পরমাণু চুক্তি বাতিল করেও সমালোচিত হয়েছে তার প্রশাসনের।

এদিকে, করোনা মহামারিতে তেমন কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যায় বলেও অভিযোগ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এই ব্যর্থতা এবারের নির্বাচনের জয়-পরাজয়ে বড় নিয়ামক হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

ইনডিপেনডেন্ট

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button