লাইফস্টাইল

অফিসের কাজ দ্রুততার সাথে করার ৭টি উপায় 

একসাথে অনেক কিছুতে মনোযোগ দিতে গিয়ে প্রায়ই আমরা সময়মতো অফিসের কাজ শেষ করতে পারি না। প্রত্যকটা মানুষের কাজের একটা নির্দিষ্ট ধরন আছে, একেক রকম টাইমিং আছে। তাই এটাই স্বাভাবিক যে একেকজনের কাজ একেক সময় শেষ হবে। কিন্তু কর্মজীবনে আমাদের সবাই সেই ছাড় পায় না।

অনেকের সব কিছুই এখনি চাই, এই মুহূর্তে চাই। অনেক সময় মনে হয়- “বাকি কলিগরা কিভাবে ফটাফট কাজ শেষ করে ফেলছে! ওদের কাছে এমন কী জাদুমন্ত্র আছে যে ওরা দুই ঘণ্টার কাজ বিশ মিনিটে শেষ করে ফেলে? আমি কি তাহলে ওদের চেয়ে কাজে খারাপ?” আসলে ব্যাপারটা মোটেও সেরকম না।

আপনার কাজ করার ধরনে কিছু পরিবর্তন আনলে আপনিও পারবেন ঝটপট অফিসের কাজ শেষ করতে। এই ৭টি উপায়ে আপনি বাড়িয়ে ফেলতে পারেন আপনার প্রোডাক্টিভিটি! চলুন তবে উপায়গুলো জেনে নেই!

১) কাজের প্রাধান্য অনুসারে লিস্ট করুন
একজন ভালো কর্মচারীর সবচেয়ে বড় গুনের একটা হল প্রায়োরিটি সেট করতে পারা। আপনাকে বুঝতে হবে কোন কাজটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটা আগে ধরা। অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজটা জটিল ও সময় সাপেক্ষ হতে পারে। তখন আপনাকে বুঝে নিতে হবে কাজটিতে যথেষ্ট সময় দেওয়ার জন্য আপনি আগে সেটা করবেন নাকি ছোট খাটো কাজগুলো আগে সেরে নিবেন। যদি কোনভাবেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটির জন্য বাড়তি সময় ম্যানেজ না করা যায়, তাহলে আগে সেটা শেষ করে বাকিগুলো ধরুন। প্রতিদিন অফিসে ঢুকেই আপনাকে টু ডু লিস্টটা প্রায়োরিটি অনুসারে সাজাতে হবে।

২) নিজের কাজের অভ্যাস বুঝুন
একেক মানুষ একেকভাবে কাজ করে। কেউ কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনলে ভালো কাজ করতে পারে, আবার কেউ গান শুনলে ফোকাস হারিয়ে ফেলে। আপনি খেয়াল করে দেখুন আপনি কিভাবে কাজ করলে আপনার মনোযোগ দিতে সুবিধা হয়। যা যা কাজের সময় আপনার মনোযোগে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়, সে সব কিছু দূরে সরিয়ে রাখুন। আপনার ডেস্ক এমনভাবে সাজিয়ে রাখুন যেন আপনার মনোযোগ দিতে সুবিধা হয়।

৩) বড় কাজগুলো ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন
আমাদের কাজে যখন বড় কোন কাজ আসে, যেটা আমাদের কাছে জটিল মনে হয়, তখন আমনা জেনে বা নিজের অজান্তে সেই কাজটা পিছাতে থাকি। কাজটা থেকে সারাদিন ধরে পালাতে থাকি। কিন্তু কাজটা আসলে ভয় না পেয়ে আমাদের উচিত বড় কাজকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নেওয়া। ধরুন আপনাকে সারা বছরের একটা কাজের ক্যালেন্ডার বানাতে হবে। আপনি সেটা ছোট অনেকগুলো পার্টে ভেঙ্গে সেগুলোতে ফোকাস করুন, একবারে পুরো ক্যালেন্ডারের কথা ভাবলে সব তালগোল পাকিয়ে যাবে। আগে ভাবুন আপনি প্রথম সপ্তাহের জন্য কী করবেন। একবার কাজের ছোট কোন অংশে ঢুকে গেলে বাকিটা আপনা আপনিই আপনার মধ্যে চলে আসবে। শুরু করাটাই সবচেয়ে বড় স্টেপ।

৪) ব্রেক নির্ধারণ করুন
টানা অনেক্ষণ কাজ করলে কাজের গুনগত মান খারাপ হয়ে যায়, আবার আমরা তাড়াতাড়ি ক্লান্তও হয়ে পড়ি। সেজন্য আমাদের একটু পর পর ছোট বিরতির প্রয়োজন। যেমন টানা দুই ঘন্টা কাজ না করে আপনি নিজেকে বলবেন আমি টানা বিশ মিনিট কাজ করবো, তারপর ৫ মিনিটের একটা ব্রেক নিব। তারপর আবার ২০ মিনিট, আবার ব্রেক। এভাবে যতক্ষণ কাজটা করবেন, ততক্ষণ আপনি কাজটায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবেন।

৫) কিছু শর্ট কাট শিখে নিন
অনেক সময় আমাদের মস্তিষ্ক যত তাড়াতাড়ি কোন ভাবনা ভাবে, আমাদের হাত ততো তাড়াতাড়ি সেটা লিখে নিতে পারে না। তাই নিজের টাইপিং স্পিড বাড়ান। কম্পিউটারের কিছু কমন শর্ট কাট শিখে নিন। এতে আপনার অনেক সময় বাঁচবে। এক কাজ বারবার না করে কিভাবে এই সময়টা বাঁচানো যায়, তার জন্য কী-বোর্ডের শর্ট কাট অপশনগুলোর সাথে নিজেকে অভ্যস্ত করে ফেলুন।

৬) অন্যান্য মানুষদের সাথে কাজ করুন
অনেক সময় আমরা একা একা কাজ করলে বেখেয়াল হয়ে যাই। দিবা স্বপ্ন দেখতে থাকি, কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় হারিয়ে যাই। কিন্তু অন্যান্য কলিগদের মাঝে কাজ করলে তাদের কাজ করতে দেখে আপনারও কাজের মুড আসবে। অন্যদের সামনে আপনি লজ্জায় পড়ে হলেও এদিক ওদিক মনোযোগ দিতে পারবেন না। সেজন্য চেষ্টা করুন আপনার প্রোডাক্টিভ কলিগদের পাশে বসে কাজ করতে।

৭) কাজ শুরুর আগে নিজেকে সময় দিন
যেকোন কাজ শুরু করার জন্য আমাদের একটা মুডে যেতে হয়। যতক্ষণ কাজের মুড আসে না, ততক্ষণ আমরা খুব সহজেই বেখেয়াল হয়ে পড়ি। তাই কাজ শুরুর আগে শান্ত হয়ে বসে নিজেকে কিছুক্ষণ সময় দেওয়া উচিত। মাত্র অল্প কয় মিনিট নিজেকে সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলুন। তারপর মনে মনে কাজটা নিয়ে ভাবুন। এতে আপনার মনোযোগ অনেক অংশে বেড়ে যাবে।

তবে অফিসের কাজের চাপ না নিয়ে এবার নিজেকে তৈরি করুন নতুনভাবে। আশা করি আপনার অফিসের কাজ হবে একইসাথে দ্রুততার সাথে ও সার্থকভাবেও!

সংগৃহীত

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button