লাইফস্টাইল

ঘরের কাজে ভারসাম্য আনবেন যেভাবে

মাতৃত্ব যেমন আনন্দের, তেমনি কঠিনও। দেখা যায় সব কাজ গুছিয়ে শেষ করে নিজের জন্য আর সময় পান না মায়েরা। তবু প্রতিদিন আবারো একই উদ্যমে হাসিমুখে সন্তানদের সামলান। মা হওয়ার এই জীবনের ঝামেলাগুলি আরেকটু সহজ হয়ে গেলে কেমন হয়?

#১. কিছু কাজ আগেই সেরে নিন
কাউকে বেশি ঘুমানোর পরামর্শ দেয়া সহজ। কিন্তু এই কাজ যতটা সহজে বলা যায়, ততটা সহজে আসলে করা যায় না। বুদ্ধিমানরা সাধারণত ভোরবেলায় কিংবা রাতের বেলায় বেশিরভাগ কাজ সেরে নেন। কেউই সকাল এবং রাত দুই বেলায়ই অনেক কাজ করেন না। আপনার রুটিন ও শিডিউল অনুযায়ী কখন বেশি কাজ করলে ভালো হবে, তা খুঁজে বের করুন।

#২. দীর্ঘসূত্রিতাকে ”না” বলুন
মায়েদের কাজ সারাদিনের। তা কখনোই শেষ হয় না। এর মধ্যে যদি “পরে করবো” “পরে করবো” ভেবে একটু হেলা করেন তাতেই গণ্ডগোল হবে। প্রত্যেকটা কাজের জন্য আলাদা সময় বরাদ্দ করে রাখুন বা সময় অনুযায়ী কাজ কী করবেন দেখুন। দিনের এক ঘণ্টা ঘরের বিভিন্ন কাজ, এক ঘণ্টা প্রয়োজনীয় কাজ এবং এক ঘণ্টা অন্যান্য কাজের জন্য ঠিক করে রাখুন।

#৩. নিজের চারপাশ পরিপাটি রাখা 
সফল মায়েদের বাসা সবসময় তকতকে ঝকঝকে না থাকলেও তারা ঘরের পরিবেশ সুন্দর ও বিন্যস্ত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। অর্থাৎ তারা ঘর যথাসম্ভব গুছিয়ে রাখেন, সন্তানদের নিজেদের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখতে উৎসাহিত করেন। চাপ না নিয়ে দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যাবার অনুপ্রেরণার জন্য তারা মাঝে মাঝে ঘরে বিভিন্ন পোস্টারও লাগিয়ে রাখেন।

#৪. মাল্টিটাস্কিং করা
সফল মায়েরা মাল্টিটাস্কিংয়ে এমনিতেই দক্ষ। একসঙ্গে তারা কমপক্ষে তিন চারটা কাজ করে ফেলেন। এই পদ্ধতি নতুন নতুন ক্ষেত্রে খাটান, দেখবেন সময় অনেক সেভ হচ্ছ।

#৫. নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা না করা
মা হিসেবে একেকজনের অভিজ্ঞতা ও জীবন আলাদা। আপনার জন্য তাই যেটা ভালো সেটাই করুন। অনেকে অনেক কিছু বলবে, তাতে কান দেবেন না। দশবারও যদি হেরে যান, মনে হয় ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন তবুও হতাশ হবেন না বা অন্যের দিকে তাকিয়ে ভাববেন না যে মা হিসেবে আপনি কারো চেয়ে কম।

#৬. প্রয়োজনে “না” বলা
আপনার দৈনন্দিন জীবনে বিঘ্ন ঘটাতে পারে এমন কাজকে সাধারণত “না” বলুন। আপনি মা বলে কখনো বন্ধুদের সাথে কোথাও বসে আড্ডা দিতে পারবেন না এমন চিন্তা ঝেড়ে ফেলে দিন। কে কী বলে তার চেয়ে নিজেকে অগ্রাধিকার দিন।

#৭. সাপোর্ট সিস্টেম তৈরি করা
পরিবার পরিজন, বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী ও অন্যান্য আস্থাভাজনদের নিয়ে একটা সাপোর্ট সিস্টেম তৈরি করুন। এতে করে আপনার বাচ্চার খেলার সাথী পাওয়া থেকে শুরু করে যেকোনো প্রয়োজনে সাহায্যও চাইতে পারবেন।

#৮. যেসব জিনিস নিয়মিত কিনতে হয়
এমন অসংখ্য ব্যবহার্য জিনিস আছে যা নিয়মিত কিনতে হয়। যেমন: চাল, ডাল, আটা, মশলা, বাচ্চাদের স্কুলের খাতা, পেন্সিল, কলম, ওষুধপত্র। এসবের জন্য একটা লিস্ট রাখুন। তাতে নিয়মিত বিভিন্ন জিনিস চেক করে লিখে রাখুন কয়েকদিনের মধ্যেই কোন জিনিসটা শেষ হয়ে যাবে। পুরো শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই কিনে রাখুন বা আনিয়ে রাখুন। তাতে ওই জিনিসের ঘাটতি হবে না।

#৯. কাজ করার সময় মাঝে ব্যস্ত রাখুন সন্তানকেও
ঘরের কাজ শুরু করার আগে বাচ্চাকে কোনো একটা ঘরের কাজ দিন করতে। যেমন, আপনি রান্না করলেন, আর বাচ্চাকে কিছু কাপড় দিয়ে আসলেন ভাঁজ করতে। ভাঁজ হয়ত ঠিকমতো করতে পারবে না, কিন্তু কাজটা করতে চেষ্টা করবে, চেষ্টা করতে করতে কাজটাই শিখে যাবে। আর যেহেতু সে নিজে গুছিয়ে রাখছে, পরবর্তীতে ওই কাপড় আর সে এলোমেলো করবে না। তাতে একটা সময় গিয়ে আপনার বার বার এলোমেলো কাপড় ভাঁজ করার ঝামেলাও আর পোহাতে হবে না।

#১০. সন্তানকে নিজের কাজ করায় অভ্যস্ত করান
বাচ্চারা ঘর এলোমেলো করাকে একরকম খেলা মনে করে। অন্য খেলার সময়ও এলোমেলো করে। ফলে ঘর টিপটপ রাখতে আপনাকে একই কাজ বার বার করতে হয়। তাই ঘর যখন গোছাচ্ছেন সঙ্গে আপনার সন্তানকেও নিন। সহজ, ছোট ছোট কাজগুলি বাচ্চাকে দিয়ে করান। এতে তার মধ্যে শৃঙ্খলা গড়ে উঠবে। কাজটা সে উপভোগও করবে আর গোছালো হয়ে উঠবে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button