দাবানলে আবারও হুমকির মুখে আমাজনের বিস্তীর্ণ অংশ
‘পৃথিবীর ফুসফুস’ বলে পরিচিত আমাজনের বিস্তীর্ণ অংশ গত বছরের আগস্ট মাসে দাউদাউ করে জ্বলছিল। অসংখ্য দাবানলে জ্বলছিল গোটা বনাঞ্চল, গাছপালা, বন সম্পদসহ লাখ লাখ প্রাণি আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছিল গতবছর। বছর ঘুরতেই আবারো একই চিত্র। আবারও দাবানলে পুড়ছে আমাজন এর বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
অন্যদিকে এ বছর দাবানলে মৌসুমের শুরুতেই অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা বাড়ায় উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছরের চেয়ে আরো বেশি খারাপ হতে যাচ্ছে আমাজনে এ বছরের দাবানল পরিস্থিতি।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি বলেছিলেন, আমাজনে দাবানল বাড়ার যে তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে, সেগুলো সত্যি নয়। কিন্তু, তাঁর সরকারের প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে আমাজনে দাবানল বেড়েছে।
কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ব্রাজিলের অংশে পড়া আমাজনের ১৩ হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি অঞ্চল পুড়ে গেছে।
গত বছর প্রথম আমাজন অগ্নিকাণ্ডের কথা সামনে এনেছিল ব্রাজিলের ‘ন্যাশনাল স্পেস এজেন্সি’। এ বছরও তাদের প্রকাশ করা ছবিতেই ধরা পড়েছে দাবানল। এতে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি জ্বলছে আমাজন। শুধু ব্রাজিলেই ছয় হাজার ৮০৩টি অঞ্চল জ্বলছে আগুনে।
আমাজনের ৬০ শতাংশ বনভূমি ব্রাজিলের অন্তর্গত। পঞ্চান্ন হাজার বর্গ কিলোমিটার স্থানজুড়ে অবস্থান করা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বৃষ্টি অরণ্য আমাজন পৃথিবীর প্রায় ২০ শতাংশ অক্সিজেন উৎপাদন করে এবং এক-চতুর্থাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে।
এ কারণে আমাজন অরণ্যকে বলা হয় ‘বিশ্বের ফুসফুস’।বিশ্ব উষ্ণায়ন ও পরিবেশ দূষণ মোকাবিলায় আমাজনের ভূমিকা অনন্য।
আমাজন বনাঞ্চলে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় প্রায় প্রতিবছরই কমবেশি দাবানল হয়।আশঙ্কা করা হচ্ছে, আমাজনের দাবানল আরো বাড়বে। হাতের বাইরে চলে যেতে পারে পরিস্থিতি।
গত বছরের পরও এবার আবার কীভাবে এতটা আগুন ছড়াল, তা নিয়ে দিধা দন্দে অনেকেই। চিরহরিৎ অরণ্য আমাজনে প্রতিবছর এত আগুন কী করে লাগছে, এখন সেটাই বড়ো প্রশ্ন বিশ্ববাসীর কাছে।